আশিকুর রহমান:
গাজীপুরের সিনেমা হল গুলোতে উপচে পড়া ভীড়। সন্দেহের তীরটা একটু ব্যতিক্রম । সিনেমায় অভিনয়ের দৃশ্য দেখার পাশাপাশি,উঠতি বয়সীদের লাইভ বা সরাসরি অশ্লীল কিছু দৃ্ষ্টি গোচর হলো । নিজের চোখে ঝাপসানো দৃশ্য । মনে হলো ভালভাবে অবলোকন করি ।হ্যাঁ, ঘটনা সঠিক,এতক্ষণ যা দেখছিলাম সেটাই বাস্তব । আবাসিক হোটেলের পতিতাবৃত্তির চেয়েও বেশি কিছু ।
সিনেমার গল্পের রেস ধরে বলছি,শুনুন ভিন্ন কৌশলে
একশো টাকায় টিকেট কেটে সিনেমা হলের ভিতরে প্রবেশ করলেন যুবক রায়হান(ছব্দ নাম)। হলের প্রথম সিড়িবেয়ে দু'তলায় উঠেন তিনি প্রথম শ্রেণীর সাড়িতে বসে বলিউডেন একশ্যান সিনেমা উপভোগ করার জন্য। গত বেশ কয়েক বছর যাবত বাংলা সিনেমার করুণ অবস্থার জন্য মন্দ যাচ্ছে সিনেমা ব্যবসা। লসের মুখে মালিকরা।
বাংলাদেশের অনেক সিনেমাহল এখন বিলুপ্তের পথে। যাই হোক,রায়হান টিকিট কেটে সিনেমা হলের প্রবেশের পরই তার মনে কিছুটা সন্দেহর সৃষ্টি হয়। কিশোর-কিশোরীরা,মধ্য বয়সী পুরুষ- মহিলার পৃথক স্থানে বসে কিছুর অপেক্ষায়,লোভনীয় ঐসব চেহারাগুলোর কারণে তার সন্দেহের প্রবণতা প্রথমের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। ৭ বছর বয়সে রায়হান বাবা-মা'র সাথে প্রথম সিনেমা হলে ছবি,বাংলা ছবি দেখতে যান সেই নব্বই দশকে। হই-হুল্লর, টিকিট কাটার জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়ানো এসব কিছু'ই ২০-২২ বছর পর সিনেমা হলে ছবি দেখতে যাওয়া রায়হানের চোখে না পড়ায় তার মনে বিষন্নতা তৈরি হয়।
যাই হোক,রায়হান ফাস্ট ক্লাসে ঢুকলেন। ঘনঅন্ধকার ইংলিশ মুভি চলছে, মোবাইলের লাইট অন করে বসার জন্য একটি আসন বেছে নেন তিনি। ইংলিশ মুভি দেখবে বলে! ভিতরে বসার দশ মিনিটের মধ্যে'ই ২৫-২৬ বছর বয়সের একজন মহিলা এসে তার পাশের সিটে বসেন। তারপর সেই মহিলা রাহয়ানের নাম জানতে চায়। রায়হানও তার নাম বলে। মহিলাটি ইঙ্গিতে রায়হানকে কিছু বুঝাতে চালাচ্ছিল! মহিলার আচার-আচরণ তার কাছে সন্দেহ হলে রায়হান ঐ আসন ত্যাগ করে অন্য একটি আসনে চলেযায়। সেখানেও অন্য একটি মেয়ে এসে তাকে অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য প্রস্তাব করে। বিনিময়ে ঐ মেয়েটি তার কাছে ৩০০-৫০০ টাকা দাবী করেন। রায়হান দ্বিতীয়বার আসা ঐ মেয়েটির কাছে তার পরিচয় জানতে চান? মেয়েটি একজন যৌনকর্মী বলে তাকে জানান। রায়হান জানতে চান সিনেমা হলের ভিতরে এসব কি? মেয়েটি বলল, এখানে কেউ টিকেট টাকা খরচ করে ছবি দেখতে আসে নাকি! আসে তো আমাদের সাথে কাজ করতে। উদাহরণ হিসেবে রায়হানকে মেয়েটি হলের মেজেতে পড়েথাকা কিছু যৌন কাজে প্রটেক্টিভ হিসেবে ব্যবহৃত পণ্য'র খালি পেকেট দেখান। রায়হানের আর বুঝতে বাকি রইলোনা এখন সিনেমা হলের ছবি দেখার অন্তরালে কি হচ্ছে!
বলছিলাম বিলুপ্তের পথে বসা গাজীপুর চৌরাস্তায় অবস্থিত নামকরা 'বর্ষা' সিনেমা হলের গল্প। দীর্ঘ কয়েক বছর পর বাংলা ছবি দেখতে যাওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন যুবক এই প্রতিবেদক'কে এসব কথা বলছিলেন,পরবর্তীতে ছদ্মনামধারী ঐ যুবক জানতে পারে সিনেমা হলের ভিতরে হরহামেশাই এসব অনৈতিক কার্যকলাপ চলছে বহু দিন আগ থেকেই। কিশোর,যুবক,এমনকি ষাটোর্ধ্ব অনেককেই এ সিনেমা হলের ভিতরে ছবি দেখতে নয় বরং যৌন চাহিদা মেটাতেই যান। স্থানীয়রা জানায়,দীর্ঘ কয়েকবছর যাবৎ বর্ষা সিনেমা হলে দর্শকদের তেমন আগমন নেই। শুনেছি হলের ভিতরে মেয়েদের দিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ চালানো হয়। তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান গাজীপুর মেট্রোপলিটন(জিএমপির)'র ডিসি ক্রাইম মোঃ জাকির হাসান।